মেয়েরা
বাড়ীতেও নিরাপদ নয়
বাবা-মা ই হলেন ছেলেমেয়েদের সবচেয়ে বড়
বন্ধু। আর এই
বাবামা যখন তাদের সন্তানের বন্ধু হতে পারে না, তখনি ঘটে যত বিপত্তি। যদি
ছেলেমেয়েরা তাদের বাবা-মায়ের সাথে সবকিছু ভাগাভাগি করতে না পারে অথবা বাবা-মা
তাদের সন্তানদের বিশ্বাস না করে কিংবা একজন কে বেশি আর অন্যজন কে কম ভালবাসা বা
বিশ্বাস করা হয়। এরকম আরও অনেক কারনেই ঘরেবাহিরে প্রায় সব খানেই প্রতিনিয়ত ঘটছে ইভটিজিং
বা যৌন হয়রানির মতো জঘন্যতম অপরাধ।
আমার চেনা একজন মেয়ের জিবনের গল্প অনেক
ছোট করেই বলছি, মেয়েটা বাড়ির ছোট মেয়ে বাবা-মা আর বড়বোনের সংসার তাদের। বড় বনের
কথায় যেন বাড়িতে সব। কোন কথার ভালমন্দের বিচার নেই এখানে ছোট মেয়েটা বঞ্চিত। সে
পরিবারে অতটা মুল্য পায়না যতটা তার বড় বোনকে দেওয়া হয়। পড়িবারের কৃত্রিম বা
প্রাকৃতিক যেকোনো ঝড়ই হোক না কেন সেটার খেসারত তাকেই দিতে হয়। কারন বড়রা বড়। বড়বোন
বলেই খালাস তাই মায়ের সাথে সব কাজে তাকেই নামতে হয়। আর কাজ করতে গেলে একটু ভুল হতে
পারে, হতে পারে দেরি। শুনতে হয় আরও কিছু কথা। বড়রা সবসময় ছটদের দিয়ে অনেক কাজ
করিয়ে নেই এট যেমন সত্য তারা মনে করে এদের কোন কাজ নাই এটাও সত্য। কিন্তু তাদেরকে তাদের মত থাকতে দেওয়া হয়না
কখনই। তারা হয়ত কখন ভেবে দেখেনা একটা পরিবারে যদি ছয়জন মানুষ থাকেন, আর প্রত্যেকে ৫ টা করে হুকুম করেন তাহলে কাজের স্নগখ্যা দাঁড়ায়
প্রায় ৩০টা, এর পরে সে নিজে। এখন একটা বাচ্ছা হয়েছে। বাচ্ছার ময়লা পরিষ্কার করার
দায়িত্ব ও যেন তার।
বড় বোনের বিয়ে হল, নিজেদের কোন ছেলে না
থাকায় জামায়ের কদর তো বুজতেই পারছেন। জামায় এখন সব, মা-বাবা আর বোনের কাছে সে যেন অমুল্য
ধন। অন্ধ বিশ্বাস করেন সবায় তাকে। আর এই বিশ্বাস কাল হয়ে দারিয়েছে ঐ বাড়ির ছোট
মেয়ের জীবনে। কি করবে এখন সে, কথায় যাবে। কার সাথে শেয়ার করবে তার কষ্টের কথা। বাবা মা বোন, কেউতো
মুল্য দিবেনা তার কতার। কাকে বোঝাবে তার দুলাভাই তাকে রক্ষিতা করে পেতে চায়, সুযোগ
পেলেই শুনিয়ে দেয় নানা রকম অশ্লীল কথা, আর চেষ্টা করে গায়ে হাত দেওয়ার। দুলাভাইয়ের ৩বেলায় খাওয়ানো, সকালে বিছানা পরিস্কার, কাথা বালিস গোছান
আবার রাতে বিছানা পরিস্কার, কাথা বালিস মশারী কয়েল সবকিছু ঠিক করে তার বিশ্রাম। আর এই সুযোগ গুলো নেয় তার দুলাভাই এ রকম আরও অনেক কারনে ঘড়ের ভিতরে সবার সামনে সবসয়
যৌনহয়রানির স্বীকার হচ্ছে মেয়েটি। জানিনা
এ যুদ্ধে মেয়েটি কতদিন টিকে থাকবে।
মেয়েটির কান্না শোনার মতো কেউ নেই। বাবাকে মেয়েটি বেশ কয়েকবার বলেছিল ২-৪ দিনের জন্য
বেরাতে যাওয়ার কথা, বাবা তার কোন কথায় গুরুতব দেয় নায়। এক দিন মেয়েটি বাড়িতে কিছু না বলে চলে যায়। আশ্রয় নেয় বাসা থেকে অনেক দূরে মামার বাসায়। মেয়েটি
কেন বাসা থেকে বেরিয়ে এলো, কেনই বা মামা বাড়িতে এলো এ নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নাই।
মেয়েমানুষ তো সব দোষ তার। ছরিয়ে পরলো নানা
রকম গুজব। আল্লাহ্ পাকের ও খেলা। মেয়েটিকে তার মামার বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য, মেয়েটির বাবা-মা তার দুলা
ভাইকেই পাঠালেন। মামা বাড়ির লকেরা
ইনডিরেক্টলি বুঝানোর চেষ্ঠা করেও কোন কাজ হয়নি। মামা বাড়ির সকলের এবং মেয়েটির
অনিচ্ছাস্ততেও দুলা ভাইয়ের সাথে পাঠাতে হয় মেয়েটিকে। মেয়েটির আর্তনাত আজ হইত কারো
হৃদয় স্পর্শ করেনি। তার গুমরিয়ে কান্নার শব্দ আজ
কারো কানে পউছেনি। বাচার জন্য তার যে আকুতি সে চোখের ভাষা কেউ বুঝার চেষ্টা করেনি।
সম্প্রতি প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত “
বড় আব্বুদের কাছে নিরাপদে নায়” প্রায়
এরকমই একটি শিরোনামে উঠে আসে ৫বছর বয়সী একটি মেয়ে শিশু রক্ষাপায়নি তার বড় আব্বুদের
কাছ থেকে। সারা রাত তার উপরে শুধু যৌন-অত্তাচার-ই করে খান্ত হন নি শরীরের বিভিন্ন
জাগায় সিগারেটের ছ্যাকাও দিয়েছেন। যা দেখে কর্তব্যরত ডাক্তারাও শিউরে উঠছেন
প্রতিনিয়ত। সোহাগি জাহান তনু, নিতু মণ্ডল, সুরাইয়া আক্তার রিসা, খাদিজাদের তালিকায়
যেকোনো সময় পরে যেতে পারে তার নাম। এটা হইত আমার বা আমাদের কারো কাম্ম্য নয়। তার
না বলা ভাসাগুলো বুঝতে হবে। তার কান্নার শব্দ গুলো শুনতে হবে। তাকে তার মতো করে
বেরেউঠতে দিতে হবে। তাকে সময় দিতে হবে। তা না হলে এর জন্য দায়ি আমি, আপনি, পরিবার
গোটা সমাজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন